আগুনের পাঁচটি ধরন ও নিভানোর প্রক্রিয়া জেনে নিইঃ

আরো পড়ুন
কঠিন পদার্থের আগুন :

কঠিন পদার্থের আগুন, যেমন – কাঠ, বাঁশ ইত্যাদির আগুন। এ ধরনের আগুনের ক্ষেত্রে অক্সিজেন বা তাপ এর যেকোনো একটি উপাদানকে অপসারণ বা বাধাগ্রস্থ করার ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। সাধারণত পানি ছিটিয়ে দাহ্যবস্তুর তাপমাত্রা কমিয়ে এ আগুন নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এ ধরনের আগুনে ভেজা বস্তু, কাঁথা বা কম্বলও ব্যবহার করা যাবে।

তরল পদার্থের আগুন :

তরল পদার্থের আগুন যেমন – তেল, পেট্রোল, ডিজেল ইত্যাদির আগুন। এ ধরনের আগুনের তাপ অপসারণের সুযোগ নেই বলে পানি দ্বারা তা নেভানো যায় না। বরং তৈলাক্ত তরলের আপেক্ষিক ওজন পানির চেয়ে হালকা বলে পানি ব্যবহার করলে পানিতে ভেসে এ আগুন আরো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে দাহ্যবস্তুতে অক্সিজেন সরবরাহে বাধাগ্রস্থ করাই আগুন নিয়ন্ত্রণের একমাত্র উপায়। তাই এ আগুনে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস ও ফোম বেশি কার্যকর।

গ্যাসীয় পদার্থের আগুন :

গ্যাসীয় পদার্থের আগুন যেমন – গ্যাস লাইন, গ্যাসের চুলা ইত্যাদি। বাসাবাড়িতে গ্যাস থেকে আগুন ধরলে, প্রথমে গ্যাসের লাইন বন্ধ করতে হবে। এ ধরনের আগুনে পানি অকার্যকর। ড্রাই কেমিকেল পাউডার, ফোম, কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস ব্যবহার করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।

ধাতব পদার্থের আগুন :

ধাতব পদার্থের আগুন পানিতে নেভানো যায় না। ড্রাই কেমিকেল পাউডার, ফোম, কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস ব্যবহার করেই এ আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। এ ধরনের আগুনে পানি ব্যবহার করলে বিপরীত ঘটে, আগুনের তীব্রতা বহুগুণে বেড়ে যায়। কারণ, ধাতব পদার্থে পানি (H2O) রাসায়নিক বিক্রিয়া করে হাইড্রোজেন (H) ও অক্সিজেন (O2) রূপান্তরিত হয়। উৎপাদিত হাইড্রোজেন (H) নিজেই জ্বলে এবং অক্সিজেন (O2) আগুন জ্বলতে সাহায্য করে।

বৈদ্যুতিক গোলযোগের আগুন:

কোন বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটে ৪০০০ সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা সৃষ্টি হয় বলে আগুন জ্বলে ওঠে। ইলেকট্রিক শর্টসার্কিট এর কারণে আগুন লাগলে পানি দেওয়া যাবে না। এতে যে ব্যক্তি পানি দেবেন, তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হবেন। পানি দেওয়া যাবে ছুঁড়ে বা কাটা কাটা ভাবে বা কুয়াশা আকারে, যাতে করে আপনার সাথে পানির কোন ছোঁয়া না লাগে। অর্থাৎ পানি থেকে আপনাকে বিযুক্ত থাকতে হবে। বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে নব ঘুরিয়ে আগুনের উৎপত্তিস্থলে প্রবল বেগে পানি স্প্রে করা হয়, যেমন - ফায়ার হাইড্রেন্ট বা স্প্রিংকলার সিস্টেম। তাছাড়া এ আগুন নেভাতে কার্বন-ডাইঅক্সাইড, এবিসিই ড্রাই পাউডার ব্যবহার করা হয়। সাধারণভাবে বালি বা মাটি ব্যবহার করা যেতে পারে।