ইন্টারনেট আসক্তি বা PROBLEMATIC ইন্টারনেট ব্যবহার বলতে সাধারণত ইন্টারনেটের অতিরিক্ত, বাধ্যতামূলক ব্যবহারকে বোঝায়। যারা দীর্ঘ সময় ধরে ইন্টারনেট ব্যবহার করে, তারা এই আসক্তির শিকার হতে পারে। তরুণরা বিশেষ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, কারণ ইন্টারনেটের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে।
১৫-২০ বছর আগেও যারা ইন্টারনেট নিয়ে সময় কাটাতেন, তাদের বেশির ভাগই তথ্য প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট ছিলেন। কিন্তু আজকের দিনে, কোটি কোটি মানুষ প্রতিদিন কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহার করে। ইন্টারনেট এখন আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ইন্টারনেটে কী নেই, তা বলাই সহজ; সংবাদ, তথ্য, যোগাযোগ, কেনাকাটা, ব্যবসা, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং, বিনোদন—সবকিছুই ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু যখন কেউ অত্যধিক ইন্টারনেট ব্যবহার করে, স্বাভাবিক জীবনের কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটায়, তখনই সমস্যা দেখা দেয়।
১৯৯৭ সালে, সান্দ্রা হাচকের নামের একজন মহিলার ঘটনা সামনে আসে, যেখানে তিনি তার সন্তানদের নির্জন রুমে রেখে ১২ ঘণ্টারও অধিক সময় ইন্টারনেটে কাটাতেন। মনোবিজ্ঞানীরা এই ঘটনাটি পর্যবেক্ষণ করে দেখেন যে, ইন্টারনেট আসক্তি নেশাজাত দ্রব্যের মতোই একটি ব্যাধি হতে পারে। তখন থেকেই ইন্টারনেট আসক্তির ধারণা বিস্তার লাভ করে এবং এই আসক্ত ব্যক্তিকে INTERNET ADDICTED DISORDER (I.A.D) বলা হয়।
সময়ের সাথে সাথে ইন্টারনেটে নতুন নতুন ফিচার, ফাংশন, এবং কনসেপ্ট এসেছে, যা দিন দিন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়াচ্ছে। জরিপে দেখা গেছে, ৫-১০% ব্যবহারকারী ইন্টারনেট আসক্ত। মানুষের কৌতুহল, সার্বক্ষণিক চিন্তা, অদমনীয় ইচ্ছা, এবং অসংযত আচরণবোধ—সবকিছুই ইন্টারনেট আসক্তি হিসাবে বিবেচিত হয়।
ইন্টারনেট আসক্তি কাটিয়ে উঠতে, ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় তিনটি ভাগে ভাগ করতে পারেন:
প্রথমে অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার বাদ দিয়ে ধীরে ধীরে ইন্টারনেটে কাটানো সময় কমাতে হবে এবং শুধুমাত্র আবশ্যক ব্যবহার করতে হবে। পরিবার এবং বন্ধুদের সাথে সময় কাটান এবং খেলাধুলা করুন। এভাবে ইন্টারনেট আসক্তি কাটিয়ে ইন্টারনেটের সঠিক ব্যবহার করে জীবনকে আরও সহজতর করা যায়। তাই ইন্টারনেটকে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখার সুযোগ নেই, এটি একটি আশীর্বাদ স্বরূপ।
ধন্যবাদ সবাইকে।